মেয়র মকছুদ মিয়ার ছেলে ইয়াবাসহ আটকে সমালোচনা তুঙ্গে

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট, ২০১৮ ১১:৫১ , আপডেট: ১৮ আগস্ট, ২০১৮ ১০:৩৭

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


র‌্যাবের হেফাজতে আটক ছয়জন। সাদা হাফপেন্ট পরিহিত মকছুদ মিয়ার পুত্র নিশান।

বিশেষ প্রতিবেদক:
ঢাকায় বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ সিন্ডিকেটের সাথে মহেশখালী পৌরসভার মেয়র মকছুদ মিয়ার বড়পুত্র মিরাজ উদ্দিন নিশান (২১) আটকের ঘটনায় কক্সবাজার জেলাজুড়ে তোলপাড় চলছে। সৃষ্টি হয়েছে চরম বিরূপ প্রতিক্রিয়া। এই নিয়ে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হয়েছে বলেও দাবি করেছে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এঘটনায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একই সাথে শীর্ষ রাজাকারের পুত্র হয়ে মকছুদ মিয়াকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ এবং দলীয় মনোনয়ন দেয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্নভাবে এই নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে।

১৫ আগস্ট ঢাকার এ্যালিফ্যান্ট রোড এলাকা থেকে মকছুদ মিয়ার ছেলেসহ সিন্ডিকেটের আরো পাঁচজনকে ২ লাখ ৭ হাজার ১০০ পিস ইয়াবা এবং মাদক বিক্রির ৭ কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকাসহ আটক করতে সক্ষম হয় র‌্যাব। তবে ১৬ আগস্ট র‌্যাব তা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকাশ করেন। এ সংক্রান্ত সংবাদ অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ হলে সাথে সাথে ভাইরাল হয়ে যায়। তা কক্সবাজারের স্থানীয় অনলাইন ও প্রিন্ট সংবাদ মাধ্যম এবং ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধমে প্রকাশ হলে সব স্তরের মানুষ সংবাদটি জেনে যায়। এতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সব স্তরের মানুষের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে মহেশখালী ও কক্সবাজারে এক মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এই ঘটনাকে ইস্যু করে  মকছুদ মিয়াকে আওয়ামী লীগের জেলা ও পৌরসভায় গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন এবং পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতাকর্মীরা বলেছেন, মকছুদ মিয়া অঢেল কালো টাকার মালিক। সেই কালো টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগে মহেশখালী পৌরসভার সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেয়। শুধু তাই নয়; লবিং করে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যও হয়েছেন। সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে মকছুদ মিয়ার পুত্র ইয়াবার ‘মাফিয়া’ চক্রের সদস্য হয়ে ইয়াবা ব্যবসা করেছে। একই সাথে রাজাকার পুত্র হয়ে মকছুদ মিয়া সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত পাওয়ার ঘটনাটি সমালোচনায় যোগ হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এক সময় বিএনপির রাজনীতি করতো মকছুদ মিয়া। মুখোশ পাল্টে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ক্রমান্বয়ে নানা অপকৌশলে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ গ্রাস করে নিয়েছেন তিনি। তিনি গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে মহেশখালী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি-আহ্বায়ক হয়ে রয়েছেন। ত্যাগী ও প্রকৃত নেতাদের পদ থেকে বঞ্চিত করে পৌর আওয়ামী লীগকে তিনি ব্যক্তিগত দলের মতো চালাচ্ছেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ। মহেশখালী পৌরসভায় তিনি এখন অঘোষিত রাজার মতো শাসন চালাচ্ছেন দাবি অনেকের।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে আমি শোক দিবসের কর্মসূচী নিয়ে খুব ব্যস্ত আছি। সবার মতো আমিও শুনেছি মকছুদ মিয়ার ছেলে ইয়াবাসহ আটক হয়েছে। এটা দলীয় বিষয় নয়, তাই আমি এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।’

প্রধামন্ত্রীর সাথে সাক্ষাসঙ্গী হওয়া প্রসঙ্গে এড. সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘সে মুজিবের সাথে গেছে। কিন্তু মুজিব মকছুদ মিয়াকে স্পেশাল ভাবে নিয়ে যায়নি। ওই সাক্ষাত দলে অনেকে গেছে।’